পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে পুলিশের তালিকায় থাকা ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুনকে হত্যায় জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যে এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সন্ত্রাসীদের কয়েকজনকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা গেছে। তাঁদের মধ্যে রনি ওরফে ভাইগ্না রনি, ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক, কামাল, জসিম, ইসহাক, রয়েল, ইব্রাহীম ও রুবেল অন্যতম। এদের কেউ সরাসরি গুলি করেছে, আবার কেউ সহযোগী হিসেবে ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, এসব পেশাদার সন্ত্রাসী মোহাম্মদপুর, বছিলা, হাজারীবাগ ও পুরান ঢাকার বাসিন্দা। বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে ভাড়ায় অপরাধমূলক কাজে অংশ নেন। এর মধ্যে হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হিসেবে সন্দেহভাজন যেসব ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে, তারা মোহাম্মদপুর এলাকার আলোচিত সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের হয়ে কাজ করে বলে অপরাধ জগতে আলোচনা আছে। যদিও নিহত মামুনের পরিবার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সন্ত্রাসী ইমনকে সন্দেহ করেন বলে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন।
তবে মামুন হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন। তিনি আজ মঙ্গলবার দুপরে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা গুলি করার ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ফটকের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে ১০ নভেম্বর সকালে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। তিনি মামলার হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন তখন। নিকটস্থ সিসিটিভির এক ফুটেজে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করছেন।
মামুনের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায়। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। মামুনের ছোট ভাই মো. ইকবাল বলেন, ‘এই হত্যার ঘটনায় জড়িত হিসেবে আমরা কারও নাম বলছি না। তবে বারবার একটি নাম শোনা যাচ্ছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হলে কারা, কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে; সেটা জানা যাবে।’ তিনি জানান, পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে মামলা করবেন।

