বিলুপ্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার ২০ বছর পর দেখা মিলেছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির সাপ বার্বাডোজ থ্রেড-এর। সম্প্রতি ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোজের অরণ্যে সাপটির দেখা পেয়েছেন দুই জীববিজ্ঞানী কনর ব্লেডস এবং জাস্টিন স্প্রিঙ্গার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে তারা জানিয়েছেন, বার্বাডোজের পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক মন্ত্রণায়ের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে গত মার্চ থেকে দেশটির বনাঞ্চলে টিকে থাকা উদ্ভিদ ও প্রাণীর জরিপ করছেন তারা। কিছু দিন আগে বনের গাছের একটি শেকরের গায়ে আটকে থাকা পাথরের আড়ালে দেখা মিলেছে একটি বার্বাডোজ থ্রেড সাপের।
একটি পূর্ণবয়স্ক বার্বাডোজ থ্রেড সাপের দৈর্ঘ্য ৩ থেকে ৪ সেন্টিমিটার। ১৮৮৯ সালে প্রথম এই সাপের দেখা পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ প্রজাতির এই সাপের রঙ সাধারণত গাঢ় বাদামি ও ধূসর হয়। মাথার দু’পাশে থাকে চোখ, পিঠে থাকে কমলা রঙের ডোরাকাটা দাগ। নাকের কাছে লক্ষ্য করা যায় আঁশ।
তবে চোখ থাকলেও দৃষ্টিশক্তি নেই সাপটির, অর্থাৎ জন্মান্ধ। এদের প্রজননের গতিও খুব ধীর, কারণ সঙ্গমের পরে মাত্র একটি ডিম পাড়ে স্ত্রী বার্বাডোস থ্রেড।
২০০৪ সালে সর্বশেষ দেখা মিলেছিল বার্বাডোজ থ্রেড সাপের। তারপর এবার দেখা মিলল। এতদিন পর্যন্ত বিলুপ্ত প্রাণীদের তালিকায় ছিল সাপটি।
জীববিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বার্বাডোজ ব্যাতীত বিশ্বের আর কোনো জঙ্গলে এখন পর্যন্ত এই সাপের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এই সাপটির দেখা শুধু বার্বাডোজেই পাওয়া যায় এবং সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে এই সাপটি বিশেষভাবে অভিযোজিত।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে ক্যারিবিয়ন দ্বীপপুঞ্জের প্রাথমিক বনের মাত্র দুই শতাংশ এখন পর্যন্ত টিকে আছে। বাকি ৯৮ শতাংশ বিলুপ্ত হয়েছে কৃষিকাজের জন্য, আর এই ধারা চলে আসছে চারশো বছর আগে ঔপনিবেশিক সময়ের সূচনা থেকেই।
উদ্ধার বার্বাডোজ থ্রেড সাপটিকে বনে ছেড়ে দিয়েছেন ব্লেডস এবং স্প্রিঙ্গার। দ্য গার্ডিয়ানকে স্প্রিঙ্গার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “এই সাপটি আমাদের বার্তা দিয়ে গেল যে বারবাডোজের প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংরক্ষণ করা কত জরুরি। শুধু বারবাডোজ থ্রেডই নয়, যদি আমরা সচেতন না হই— তাহলে এই দ্বীপের অরণ্যসম্পদ অচিরেই পুরোপুরি হারিয়ে যাবে।”
 
		
