নিউইয়র্ক সিটিকে কর্মজীবী পরিবারগুলোর জন্য আরও নিরাপদ ও সাশ্রয়ী করে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নগর প্রশাসন একাধিক নতুন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রশাসনের বিশ্বাস, “নিউইয়র্কে একটি শিশুকে বড় করতে পুরো শহর একসঙ্গে কাজ করে।” সেই চিন্তা থেকেই শুরু হয়েছে “ক্রিয়েটিং রিয়েল ইমপ্যাক্ট অ্যাট বার্থ” বা সংক্ষেপে “ক্রিব (CRIB)” নামের এক নতুন পাইলট প্রকল্প, যা গর্ভবতী নারী ও নবজাতক শিশুর স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
মেয়র অ্যাডামস বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়া একজন নিউইয়র্কবাসীর জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন হওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অনেকেই তখন চিন্তায় থাকেন, হাসপাতাল থেকে বের হয়ে নবজাতককে কোথায় নিয়ে যাবেন। ২০২৪ সালে নিউইয়র্ক সিটির আশ্রয়কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ছিল দুই হাজারেরও বেশি—যা মেয়রের মতে “দুই হাজার বেশি।”
এই বাস্তবতা বদলাতে ৮.৫ মিলিয়ন ডলারের বাজেটে শুরু হয়েছে “ক্রিব” প্রকল্প। এতে গর্ভবতী নারীদের জন্য দেওয়া হচ্ছে হাউজিং ভাউচার, যাতে সন্তান জন্মের আগেই তারা স্থায়ী বাসস্থানে যেতে পারেন। একই সঙ্গে থাকবে স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ সহায়তা। প্রশাসনের আশা, এভাবে নবজাতক ও মায়েদের আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে স্থিতিশীল জীবনে প্রবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এছাড়া নবজাতকের পরবর্তী দিনগুলোতে পরিবারগুলো যেন প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, সেজন্য চালু হয়েছে “এনওয়াইসি বেবি বক্সেস” কর্মসূচি। পাবলিক হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় নবজাতকের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে এক বিশেষ বাক্স—যার মধ্যে থাকবে ডায়াপার, ওয়াইপস, পোশাক, খেলনা ও তথ্যবহুল নির্দেশিকা। প্রায় সাত হাজার পরিবারকে এই সুবিধা দেওয়া হবে, যা নবীন অভিভাবকদের আর্থিক চাপ কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
একই সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়েও প্রশাসন দৃষ্টি দিয়েছে। মেয়র অ্যাডামস বলেন, নিরাপত্তা শুধু রাস্তা ও সাবওয়ে নয়, ঘরেও নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও গার্হস্থ্য নির্যাতন আজও সমাজে গভীর ক্ষত তৈরি করছে। অক্টোবর মাসকে ‘ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাওয়ারনেস মান্থ’ হিসেবে উপলক্ষ করে চালু হয়েছে এনওয়াইপিডির নতুন “ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স ইউনিট”—যা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এতে শহরের প্রতিটি থানায় প্রায় ৪৫০ জন পুলিশ তদন্তকারী নিয়োজিত থাকবেন, যারা শুধু গার্হস্থ্য সহিংসতা মামলাতেই কাজ করবেন। এর মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা ও অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেয়র বলেন, “আমরা নিউইয়র্কবাসীর জন্য প্রতিদিন, সর্বত্র কাজ করে যাচ্ছি—একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবারবান্ধব শহর গড়ে তোলার জন্য। ‘ক্রিব’, ‘এনওয়াইসি বেবি বক্সেস’ ও নতুন ‘ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স ইউনিট’—এই উদ্যোগগুলোই প্রমাণ করছে যে আমরা কাজের মাধ্যমে নিউইয়র্ককে পরিবারের জন্য সেরা শহরে পরিণত করছি।”
 
		

