নিউইয়র্কের জনপ্রিয় বাঙালি রেস্টুরেন্ট “নবান্ন”র দ্বিতীয় শাখা চালু হলো আজ। শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই দ্বিতীয় শাখার শুভ উদ্বোধন করা হয় ১৬৯-২২ হিলসাইড এভিনিউ, জামাইকা, নিউইয়র্ক ১১৪৩২ ঠিকানায়। এর আগে নবান্নের মূল শাখা ছিল ৩৭-২২, ৭৩তম স্ট্রিট, জ্যাকসন হাইটস, নিউইয়র্ক ১১৩৭২—যা নিউইয়র্কে “লিটল বাংলাদেশ” নামে পরিচিত।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নবান্ন রেস্টুরেন্টের মালিক ও বাংলাদেশি-আমেরিকান উদ্যোক্তা এবং আমেরিকার “৪০ আন্ডার ৪০ ইয়াং বিজনেস লিডারস” পুরস্কারপ্রাপ্ত মুহাম্মদ কাদের , সিআইপি স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, নবান্ন রেস্টুরেন্ট দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি স্বাদের খাবার পরিবেশন করে নিউইয়র্কের কুইন্সসহ বাংলাদেশি কমিউনিটিতে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ফিতা কেটে রেস্টুরেন্টের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মৌসুমী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ, ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার ফকরুল ইসলাম (দেলোয়ার), কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আহসান হাবিব ও কামরুল ইসলাম সনি, জামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ড সোসাইটির চিফ অ্যাডভাইজার মি. ওসমান গনি, খায়রুল ইসলাম খোকন, এবং বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেতা আহমেদ শরীফ।
বক্তব্যে দেলোয়ার সিআইপি তাঁর ম্যানেজমেন্ট টিমকে পরিচয় করিয়ে দেন। মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, কাজী মিনহাজ শুভ ও দুলাল জ্যাকসন হাইটস শাখার দায়িত্বে আছেন। আর জাহাঙ্গীর জয় জামাইকা শাখার। তিনি বলেন, “আমার এই টিমের নিবেদন ও পরিশ্রমের কারণেই নবান্ন আজ উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টের একটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি গায়ক বাদশা বুলবুল, রাজনৈতিক ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মেরি জোবাইদা (আসন্ন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান প্রার্থী, অ্যাস্টোরিয়া), অল কাউন্টি হোম কেয়ারের ডিরেক্টর সিফা আমিন, অল কাউন্টি সোশ্যাল অ্যাডাল্ট ডে কেয়ারের ডিরেক্টর মোনিরা মহিউদ্দিন, এবং অল কাউন্টি মেডিক্যাল ট্রেনিং স্কুলের কোঅর্ডিনেটর শামীমা ইতি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইমাম খালিদ সাইফুল্লাহ পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এবং নবান্ন রেস্টুরেন্টের সফলতা কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন। সমাপনী বক্তব্যে দেলোয়ার, সিআইপি বলেন, “নবান্ন কখনো খাবারের মান ও সতেজতার সঙ্গে আপস করবে না। আমাদের প্রতিটি খাবারে থাকবে বাংলাদেশের আসল স্বাদ।” তিনি আরও ঘোষণা করেন, ২০২৭ সালের মধ্যে ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন ও ম্যানহাটনে আরও তিনটি শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে পুরো নিউইয়র্কের মানুষ বাংলাদেশের আসল খাবারের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন।
নবান্ন রেস্টুরেন্টে ডাইন-ইন, টেকআউট, পার্টি হল এবং ক্যাটারিং সার্ভিস দেওয়া হবে। রেস্টুরেন্টটি ইতিমধ্যেই দিনে ৫,০০০ অতিথিকে পরিবেশনের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে, যা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন অন্যতম বৃহত্তম রেস্টুরেন্ট হিসেবে পরিচিত। নবান্নের মেনুতে রয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার, কুমিল্লার বিখ্যাত রসমালাই, দেশি স্ট্রিট ফুড এবং বাংলাদেশি স্টাইলে তৈরি চাইনিজ খাবার। নবান্ন আজ শুধু একটি রেস্টুরেন্ট নয়, বরং বাংলাদেশের স্বাদ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অনন্য প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উত্তর আমেরিকার মাটিতে।

