বন্যা, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় কিংবা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার সময় যখন মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা অচল হয়ে পড়ে, তখন বিকল্প যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে অ্যামেচার বা হ্যাম রেডিও।
আজ (বুধবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা জানান বক্তারা।
‘দুর্যোগকালীন অ্যামেচার/হ্যাম রেডিওর ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারটির আয়োজন করে বিটিআরসি। এতে সারাদেশ থেকে শতাধিক লাইসেন্সধারী হ্যাম রেডিও অপারেটর অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের নিজস্ব রেডিও ইকুইপমেন্ট ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদ বলেন, ফেনীর সাম্প্রতিক বন্যায় নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এলাকায় অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভবিষ্যতে দুর্যোগে কার্যকর সমন্বয়ের জন্য তাদের সুসংগঠিত হওয়া জরুরি।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক বলেন, হ্যাম রেডিও অপারেটররা যেন দুর্যোগকালীন প্রাথমিক সাড়া প্রদানকারী হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে, সে লক্ষ্যে দলভিত্তিক প্রস্তুতি, সচেতনতামূলক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে হবে। বর্তমানে লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজীকরণের কাজ চলমান রয়েছে।
সেমিনারে অ্যামেচার রেডিও অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়। তারা দুর্যোগ প্রটোকলে অন্তর্ভুক্তি, কাস্টমস জটিলতা নিরসন, সরকারি স্বীকৃতি, অনলাইন লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু এবং সারাদেশে রিপিটার নেটওয়ার্ক গঠনের দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার মাহমুদ হোসেন বলেন, অবৈধ ওয়াকিটকি ব্যবহার বন্ধ করে বিটিআরসি অনুমোদিত যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। হ্যাম রেডিওর ব্যবহারিক গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে, বিটিআরসি এ বিষয়ে পূর্ণ সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অ্যামেচার রেডিওর যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৯ সালে এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর এটি সরকারিভাবে গুরুত্ব পায়। এখন পর্যন্ত বিটিআরসি ৮১৩ জন অপারেটরকে লাইসেন্স ও কল-সাইন দিয়েছে। ২০২৫ সালে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৬৫ জনের লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
 
		
